শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পরিবর্তে আক্রমণাত্মক বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী

শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পরিবর্তে আক্রমণাত্মক বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী
শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পরিবর্তে আক্রমণাত্মক বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী

শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পরিবর্তে আক্রমণাত্মক বিএনপি: প্রধানমন্ত্রী

 প্রকাশ: ০২ সেপ্টেম্বর ২২ । ০০:২৯ | আপডেট: ০২ সেপ্টেম্বর ২২ । ০০:২৯

  

পরিস্থিতি তৈরির জন্য রাস্তায় নেমে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের পরিবর্তে বিএনপি আক্রমণাত্মক আচরণ করছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বিএনপির মিছিলে হামলার অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেখানে শান্তিপূর্ণ হচ্ছে, সেখানে তো কেউ কিছু বলছে না।

বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদের ১৯তম অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি। এর আগে বিরোধীদলীয় উপনেতা জি এম কাদেরও সমাপনী বক্তব্য দেন। বিএনপির সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানার বক্তব্যের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি মাঠে নেমেই আগে কোথায় কাকে কীভাবে আক্রমণ করবে? কীভাবে একটা পরিস্থিতি তৈরি করবে? এমনি মিছিল করলে তো মিডিয়াতে কাভারেজ পাবে না। মিডিয়াতে কাভারেজ পাওয়ার জন্যই তারা এমন ঘটনা ঘটাবে।

শেখ হাসিনা বলেন, 'রুমিন ফারহানা ভোলার একটি ঘটনা নিয়ে খুবই চিৎকার-চেঁচামেচি করে অনেক প্রতিবাদ করে গেছেন। আমি বলেছি- কিছু না বলার জন্য। আমি তো আন্দোলন করার কথা বলছি। বলেছি মিছিল করেন, আন্দোলন করেন; শান্তিপূর্ণ- কেউ কিছু বলবে না। যেখানে শান্তিপূর্ণ হচ্ছে, সেখানে তো কেউ কিছু বলছে না। কিন্তু পুলিশ তো আগ বাড়িয়ে কিছু বলেনি। পুলিশ বাদ দেন; একটা মানুষ যদি আক্রান্ত হয়; তার নিজেকে বাঁচানোর অধিকার আছে। না; পুলিশ আক্রান্ত হলেও নিজেকে রক্ষা করার কোনো অধিকার থাকবে না? তাদের কথায় মনে হয়- তারা বোমা ছুড়বে, লাঠি মারবে, ঢিল ছুড়বে, গুলি করবে; সব করবে। তাদের কিছু বলা যাবে না। এরা তো মাঠে নেমেই আগে কোথায় কাকে কীভাবে আক্রমণ করবে? কীভাবে একটা পরিস্থিতি তৈরি করবে? এমনি মিছিল করলে তো মিডিয়াতে কাভারেজ পাবে না। মিডিয়াতে কাভারেজ পাওয়ার জন্যই তারা এমন ঘটনা ঘটাবে।
শেখ হাসিনা বলেন, কিছু মিডিয়া ও বিরোধী দল এমন একটা হতাশা ছড়ায় যে, সব শেষ হয়ে গেল। নিজেরা কিন্তু ভালোই আছেন; চলছেন। হতাশাব্যঞ্জক কথা ছড়িয়ে মানুষদের বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এটা মোটেই সমীচীন নয়।

ভোট দেওয়া যায় না- বিএনপির হারুনের এমন বক্তব্যের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, হারুন সাহেব বলেছেন, উনার এলাকায় নাকি ভোট ডাকাতি হয়েছে। কথাটা মনে হয় ঠিক। উনি যে জিতে এসেছেন; নিশ্চয়ই ভোট ডাকাতি করে জিতে এসেছেন। তিনি যদি ভোট ডাকাতি করে না আসেন, তাহলে বুঝবেন কীভাবে, ডাকাতি হয়েছে? ভোট যদি না-ই হয়ে থাকে; উনি জিতলেন কীভাবে?

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সালে নির্বাচন করল না; '১৮ সালে ৩০০ আসনে ৭০০ প্রার্থী। এক প্রার্থী আসে লন্ডন থেকে; আরেক প্রার্থী আসে গুলশান অফিস থেকে। এক প্রার্থী আসে পুরানা পল্টন থেকে। রিজভী সাহেব একটা দেন তো, ফখরুল সাহেব একটা দেন। সব নাকচ হয়ে যায় লন্ডন থেকে। তারা তো মনোনয়ন বিক্রি করেছে। কে কত টাকা দিতে পারে- সেটা নিলাম ছিল। যে টাকা দেবে, সে-ই নির্বাচন করবে।

তিনি বলেন, মানি লন্ডারিং আর টাকা চুরির কথা বলে। সেটা যা হয়েছে; খালেদা জিয়ার ছেলের বেশ কিছু টাকা বিদেশ থেকে আনতে পেরেছি। কাজেই জাদুর বাপ ছিল বিএনপির। রাতারাতি ভাঙা স্যুটকেস, ছেঁড়া গেঞ্জির মালিক যারা, তারা হয়ে গেল হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক। আজকে লন্ডনে থাকে কীভাবে? কী নিয়ে চলে? নিজেই বলে, ক্যাসিনো থেকে টাকা নিয়ে তার সংসার চলে। তারা নাকি জুয়ার আড্ডা থেকে টাকা নিয়ে কোনোমতে বসবাস করে। এটা আমাদের শুনতে হয়। সেখানে তাদের সবই আছে। প্রতিদিন এখান থেকে তাদের জন্য কত টাকা যাচ্ছে, সেটাই খুঁজে বের করা দরকার যে, কত টাকা এইভাবে বাইরে যাচ্ছে, পাচার হচ্ছে। সেটাও তদন্ত হওয়া দরকার।

প্রধানমন্ত্রী জিয়াউর রহমান ও বিএনপি-জামায়াত সরকারের অত্যাচার-নির্যাতনের একটি ভিডিওচিত্র দেখান। ভবিষ্যতে তিনি এরশাদ সরকারের আমলের এ ধরনের ভিডিওচিত্র সংসদে প্রদর্শন করবেন বলেও জানান। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সবার হাতে নির্যাতিত হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর কারও প্রতি প্রতিশোধ নিতে যায়নি। আমরা প্রতিশোধ নেওয়ার পথে না গিয়ে গিয়েছি মানুষের উন্নয়নের পথে। আমরা সর্বশক্তি দেশের উন্নয়নে নিয়োজিত করেছি। যার সুবিধা দেশের মানুষ পাচ্ছে।

শেষ হলো সংসদ অধিবেশন
শেষ হলো একাদশ জাতীয় সংসদের ঊনবিংশতম অধিবেশন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের শেষে অধিবেশনের সমাপনী সম্পর্কে রাষ্ট্রপতির আদেশ পড়ে শোনান স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী। এর আগে অধিবেশন কক্ষে ১৯৭২ সালের ৩০ এপ্রিল মে দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের একটি ভাষণ দেখানো হয়। গত ২৮ আগস্ট শুরু হয় এ অধিবেশন